দক্ষিণাঞ্চলের একুশ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খুলনায় ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণে নেয়া হয় উদ্যোগ। তবে তা শুধু ফাইল চালাচালিতেই কেটে যায় চার বছর। যা নিয়ে ক্ষুদ্ধ খুলনার নাগরিক নেতারা। এদিকে কলেজে মোট ১২০টি আসন এবং হাসপাতালে ৫০০ শয্যা চালু করার জন্য তারা প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন। একাডেমিক ভবনে মোট ২৮টি বিভাগ থাকবে। প্রশাসনিক ভবন হবে ৮ তলা। প্রাকটিক্যাল কক্ষ, বিভিন্ন ধরনের ল্যাব, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক বিভাগ ও ৪০০ আসনের একটি লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে। থাকবে অডিটোরিয়াম, লেকচার গ্যালারি, শ্রেণিকক্ষ, টিউটোরিয়াল কক্ষ, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক কমন রুম, ক্যাফেটেরয়া প্রভৃতি। কলেজে মর্গ ও মরচুয়ারি এবং ডিএনএ টেস্টের আধুনিক ল্যাব থাকবে। হাসপাতালে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ, আউটটোর, ফার্মেসি প্রভৃতি থাকবে। নির্মাণ করা হবে হাসপাতাল ভবন, প্রশাসনিক ভবন। বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, হেলিপ্যাড, মসজিদ, পুকুর, মাঠ ও জিমনেসিয়াম তৈরি করা হবে।
তথ্য প্রযুক্তির অবাধ বিচরণে এখন সাইবার আক্রমণ একটি আতংকের নাম। দেশের অভ্যান্তরে বেশ কয়েকটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সাইবার আক্রমন ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর মধ্যে অনত্যম নাজমুল হক সজীব ওরফে ইভানের “টেক ডাউন ফাইটার্স ”। নেত্রকোনা জেলার আবু আব্বাস কলেজের ৪র্থ বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাজমুল। ২০১৬ সালে নাজমুলের ব্যক্তিগত ফেসবুক এ্যাকাউন্টটি হ্যাকড হয়ে গেলে হতাশায় পড়েন তিনি। তার পর থেকে তথ্যপ্রযুক্তির হাতে খড়ি নিতে থাকেন। এক সময় নাজমুল হয়ে উঠেন একজন সফল সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সহ বিভিন্ন বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক কোন জটিলতায় পড়লে ডাক পড়ে নাজমুল হক সজীবের। এর মধ্যে তিনি গড়ে তোলেন টেক ডাউন ফাইটার্স নামে একটি সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। যার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সাইবার বিষয়ক সাপোর্ট দিয়ে থাকেন। ভারত সহ কয়েকটি দেশের বে-সরকারী আইটি এক্সপার্টদের সাথে নাজমুল দীর্ঘ দিন যাবৎ কাজ করে আসছেন । দেশের গন্ডি পেরিয়ে নাজমুল ও তার প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যক্তিদের ফেসবুক আইডি রি-কভার, ওয়েব সাইট সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার নিরাপত্তা বিঘিœত হলে কাজ করে থাকেন। এছাড়াই ওয়েব সাইট নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য আইটি সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। নাজমুল ও তার টিম ইতিমধ্যে অনেক উল্লেখযোগ্য কাজ করে সারা ফেলে দিয়েছেন পুরো দেশে। তথ্যমতে, ২০২১ সাল থেকে নাজমুল টেক ডাউন ফাইটার্স এর সিইও হিসেবে কাজ করে আসছেন। তার নেতেৃত্বে বাংলাদেশ ও বিদেশী অবস্থানরত বিভিন্ন তরুণ কাজ করে যাচ্ছেন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা দেওয়ার জন্য। নাজমুল হক সজীবের লক্ষ্য উদ্যেশ্যে নিয়ে তিনি বলেন, আমি ও আমার টীম দেশের জন্য কাজ করছি। আমরা সরকারের পাশে একসাথে কাজ করতে ইচ্ছুক। যদি আমরা রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা বা পৃষ্ঠপোষকতা পাই তাহলে আমরা আমাদের সবুটুকু দিয়ে দেশের স্বার্থে ,দেশর সাইবার নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাব।
আলোচনায় এক ঝাঁক মেধাবি ছাত্রনেতাসাত বছর পর খুলনা জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের যৌথ স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) আহ্বান করা হয়েছে। সোমবার ছিলো নেতৃত্ব প্রত্যাশিদের সিভি জমাদানের শেষ তারিখ। কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ছয়জন নারীসহ শতাধিক নেতৃত্ব প্রত্যাশি সিভি জমা দিয়েছেন। সিভি জমাদানকারি ছয় নারি কর্মি হলো, শেখ প্রিয়া, শেখ রিয়া, মনিরা ইসলাম মুন্নি, সিনথিয়া আলম মীম, রিচি ও পুজা সরকার।এদিকে দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে জেলা ছাত্রলীগের তৃণমূলের কর্মিরা। কমিটির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিবাহিত। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির অনেকেরই নেই ছাত্রত্ব। যা নিয়ে এই কমিটির সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলো ক্ষোভ ও অসন্তোষের ছাপ। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে মো. পারভেজ হাওলাদার সভাপতি ও মো. ইমরান হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রæয়ারি রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। খুলনা জেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে ৯টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা, ৪টি সরকারি কলেজ, ৪৪টি বেসরকারি কলেজ, ৬৫টি ইউনিয়ন, একটি সাংগঠনিক ইউনিয়ন ও ২টি আঞ্চলিক কমিটি রয়েছে। এর অধিকাংশরই মেয়াদোত্তীর্ন। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় আসছে না নতুন নেতৃত্ব । যে কারণে হতাশা নিয়ে সাংগঠনিক অনেক সাধারণ নেতা-কর্মী ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন। নেতৃত্বের গুণাবলী থাকার পরেও এতদিন পদ জোটেনি বহু ছাত্র নেতার।নতুন কমিটিতে পদ পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন জেলা ছাত্রলীগে দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকা এক ঝাঁক নেতা-কর্মীরা। শোনা যাচ্ছে, ইতোমধ্যে সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করছেন অনেকে। এরমধ্যে সাংগঠনিক দক্ষতা, শৃঙ্খলা ও ক্লিন ইমেজের অধিকারীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন বেশ কয়েকজন।সভাপতি প্রার্থী পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মারুফ হোসেন, জেলা দপ্তর সম্পাদক বাধন হালদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুজ্জামান তানভীর, জেলা উপ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক সৌভিক শুভ, কয়রা উপজেলার সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফ। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে জেলার ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর রহমান আকাশ, প্রচার সম্পাদক চিশতী নাজমুল বাসার সম্রাট, আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. রাসেল, সহ-সম্পাদক পলাশ রায়, সদস্য রায়হান জামান অয়ন প্রমুখ।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজস্ব পরিচয়ে ভোট দিতে পারবেন না হিজড়ারা। জেলায় মাত্র ১৪ জনের পরিচয় পত্রে তৃতীয় লিঙ্গ উল্লেখ রয়েছে। বাকিরা আগের মতো ‘নারী’ অথবা ‘পুরুষ’ হিসেবে ভোট দিতে হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহম্মেদ।বেসরকারি হিসাবমতে এ জেলায় হিজড়ার সংখা দুই শতাধিক। যার অধিকাংশ গেজেটের পূর্বে হওয়ায় তারা নারী বা পুরুষ হিসেবে ভোটার। তবে কারও কারও নামের সাথে ডাক নাম রয়েছে হিজড়া যা নিয়ে ক্ষোভ এ জনগোষ্ঠির। এছাড়া ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে রয়েছে অগনিত। যার কোন পরিসংখ্যান করা সম্ভব হয়নি।স্বপ্নচূড়া মানবকল্যান সংস্থার সভাপতি তৃতীয় লিঙ্গের আফরিন ইসলাম অর্পা বলেন, আমি হিজড়া জনগোষ্ঠির সদস্য, অথচ আমাকে ভোট দিতে হবে নারী হিসেবে। আমার জাতীয় পরিচয় পত্রে রয়েছে নারী। তিনি আরও বলেন, এ সম্প্রদায়ের অনেক সদস্য রয়েছে পরিচয় পত্রে যাদের ডাক নাম রয়েছে হিজড়া, যেটাও কাম্য নয়। আমরা চাই নিজস্ব পরিচয়ের স্বীকৃতি। যা শুধু কাগজে সীমাবদ্ধ থাকবে না।ছিন্নমুল মানবকল্যান সোসাইটির সভাপতি সিমলা বলেন, আমি জন্মগত ভাবে হিজড়া। তবে আমার পরিচয় পত্রে রয়েছি নারী হিসেবে। আমরা আমাদের অধিকার চাই। নিজস্ব পরিচয়ে বাঁচতে চাই। নক্ষত্র যুব মানব কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলামিন শরীফ বলেন, আমাদের সংগঠনের সভাপতি পাখি দত্তর জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের সামনে ডাক নামে লেখা হিজড়া। তাছাড়া লিঙ্গের স্থানে লেখা অন্যান্য। আমরা চাই হিজড়াদের তাদের নিজস্ব পরিচয়ে পরিচয় পত্র দেয়া হোক। নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহম্মেদ বলেন, নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা তৈরি হয়ে গেছে। যে কারণে এবারের নির্বাচনে ভোটার তালিকায় হিজড়াদের লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব নয়।খুলনা জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, নানা কারণে এই সমস্যাটার সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকেই পুরনো ভোটার, গেজেট হওয়ার আগেই ভোটার হয়েছেন। যার কারণে পুরুষ বা নারী রয়েছে পরিচয় পত্রে। তবে কেউ যদি উদ্দেশ্যমুলকভাবে তাদের নারী বা পুরুষ পরিচয় দিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, পরিচয়পত্র সংশোধনের সুযোগ রয়েছে, যাদের ক্ষেত্রে এরকম হয়েছে।
# গতি হারিয়েছে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার প্রকল্পজলবায়ু পরিবর্তনে খুলনায় রেকর্ড তাপমাত্রা। অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র হচ্ছে সুপেয় পানির সংকট। বিশেষ করে উপক‚লীয় এলাকা (খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা) পানযোগ্য পানি সংগ্রহে রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশে যখন বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে তখনও উপেক্ষিত দেশের দক্ষিনাঞ্চলের উপক‚লীয় এলাকার মানুষেরা। এ নিয়ে ক্ষোভ নাগরিক নেতাদের।মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে গোটা খুলনা বিভাগ। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে এ বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলায়। সোমবার খুলনা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল আর বিভাগের যশোর জেলায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ওপর দিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর তা থাকছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। এদিকে উপক‚লীয় জনপদের কষ্ট লাঘবে ২০২২ সালে শুরু হয় ‘উপক‚লীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ’ প্রকল্প। হাজার কোটি টাকার সেই প্রকল্পর ২০২৫ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবায়নে হারিয়েছে গতি। প্রকল্পের অগ্রগতির হার ৩৫ শতাংশ। দুর্যোগপ্রবণ উপক‚লীয় এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পে গতি ফিরিয়ে না আনা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যহত হবে বলছে উপক‚লীয় অঞ্চলে কাজ করা বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গুলি। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিসিডিবির গবেষনা বলছে দেশের খুলনা-সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার উপক‚লীয় উপজেলার ৮৭ ভাগ মানুষ চরম দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে ঝুকিতে থাকা উপক‚লীয় এসব মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না হলে এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।জলবায়ু নিয়ে কাজ করা অ্যাওসেড এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ শামিম বলেন, উপক‚লীয় এলাকায় পানির যে আঁধার ছিলো, তা আমরা বন্ধ করে অবকাঠামো নির্মাণ করেছি। পুকুরগুলো সব বন্ধ করে দিয়েছি। এ অঞ্চলের বুষ্টির পানি ভ‚গর্ভস্থ হতে পারে না। পাশাপাশি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় তা ধারণ ক্ষমতা হারিয়েছে। গত ত্রিশ বছরে নদীগুলো নাব্যতা হারিয়েছে। উপক‚লীয় এলাকায় বাধ থাকার কারণে নদী ও খালের মধ্যে ধাবিত হয়েছে। সরকারি খালগুলো উদ্ধার করতে হবে। এরপওে পূর্নখনন করে তার যর্থাথ ব্যাবহার করতে হবে। মিঠা পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। যেভাবেই হোক বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের উদ্যোগ নিতে হবে।খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বিরুপ প্রভাব পড়েছে খুলনায়। যা মোকাবিলায় পুকুর খননসহ একাধিক প্রকল্পর পরিকল্পনা রয়েছে।জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘উপক‚লীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ’ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১ কোটি টাকা। ২০২২ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। খুলনার উপক‚লীয় তিন জেলার ২০টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকাগুলো হলো, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া, রূপসা, তেরখাদা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা। বাগেরহাট জেলার কচুয়া, চিতলমারী, মোংলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও শরণখোলা। সাতক্ষীরা জেলার সদর, আশাশুনি, কলারোয়া, কালীগঞ্জ, তালা, দেবহাটা ও শ্যামনগর। এই প্রকল্পের আওতায় বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য প্রতিটি ট্যাঙ্কের পানি ধারণক্ষমতা তিন হাজার লিটার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতিটি পানি সংরক্ষণ ইউনিট নির্মাণে ৪৫ হাজার টাকা এবং ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্মাণে ৬ হাজার ৯৮০ টাকা ব্যয় হবে। এরই মধ্যে ৫০ হাজার পানি সংরক্ষণ ইউনিট নির্মাণ এবং ৩ হাজার ৮০০ ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পভুক্ত এলাকাগুলোয় সেফলি ম্যানেজড পানি সরবরাহের কাভারেজ ২০৩০ সাল নাগাদ ৬০ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত করা হবে। খুলনা সুপেয় পানির তীব্র সংকটে ভুগছেন খুলনা জেলার উপক‚লীয় উপজেলা সমুহ। শুকিয়ে গেছে পুকুর, নলকুপে উঠছেনা পানি। সমস্যা সমাধানে সরকারি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হরছে ঠিকই, কিন্তু তদারকি করার মতো কেউ নেই। ফলে এ প্রকল্পের অধিকাংশ ট্যাংকি নামমাত্র পড়ে আছে। জনপ্রতিনিধির লোক ছাড়া পাচ্ছে না পানির ট্যাংকি। অভিযোগ রয়েছে পানির ট্যাংকি বসাতে নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত টাকা।বটিয়াঘাটার সুরখালি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, প্রকল্পের কাজ চলমান। আমি ইউনিয়নবাসির মধ্যে বন্টন করি। তবে অন্য জনপ্রতিনিধিরা কে কি করলো তা আমি বলতে পারবো না।পাইকগাছার বাজুয়া চেয়ারম্যান মানস কুমার সাহা বলেন, প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। পানি ট্যাংকিতে সংরক্ষিত পানি দুই থেকে তিন মাস যায় একটি পরিবারের। যা উপক‚লবাসির চাহিদা পূরন করতে পারছে না।কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, চলমান এ প্রকল্পের দায়িত্বে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য। তাই এ প্রকল্প সম্পর্কে আমার জানা নেই।খুলনা-১ আসনের এমপি ননি গোপাল মন্ডল বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পরে এ প্রকল্পের কোন কাজ পাইনি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানের তীব্র তাপদাহে তরমুজ চাষের ফলে কোথাও সুপেয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ অঞ্চলের অন্যতম আয়ের উৎস তরমুজ চাষ। পানির কারণে যা ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা নিরসনে তিনি সরকারি পুকুরগুলো থননের কথা ভাবছেন বলে জানান। বাগেরহাট বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলায় তিন হাজার পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। তবে আরও তিন হাজার স্থাপন করা হবে। তবে কোনটি ট্যাংকিতে-ই পানি নাই। এ উপজেলায় চলছে পানির জন্য হাহাকার।উপজেলার হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন বলেন, প্রায় পাঁচশত পানি ট্যাংক স্থাপন করা হইছে। তবে কোনটায়ই এখন পানি নেই। পানির জন্য হাহাকার চলছে।এ ইউনিয়নের স্কুল শিক্ষক মোঃ আলামিন হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িতে একটা ট্যাংকি স্থাপন করা হইছে। যা তিন মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এখন আমরা প্রায় আট কিলোমিটার দূর থেকে পানি কিনে খাই। মোরেলগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় মোট তিন হাজার ট্যাংকি স্থাপন করা হয়েছে। আরও তিন হাজার স্থাপন করা হবে। যার কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ট্যাংকির জন্য বাজেট ৪৫ হাজার টাকা। এছাড়া স্থাপনের জন্য ১৫০০ টাকা নেওয়া হয়। সাতক্ষীরা লবণাক্ততার কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকটে ভুগছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার। সমস্যা সমাধানে সরকারি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তদারকি করার মতো কেউ নেই। ফলে এ প্রকল্পের অধিকাংশ ট্যাংকি নামমাত্র পড়ে আছে। এ এলাকায় পানির ট্যাংকি বসাতে নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। ১৫০০ থেকে শুরু করে ১৫ হাজার পর্যন্ত টাকা নেওয়া হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক জানান, শুরু থেকেই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সরকারি প্রকল্পগুলো যদি ঠিকমতো কার্যকর হতো তাহলে পানির সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হতো।’ এসব প্রকল্প আসল অর্থে কোনো কাজের নয়।শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাছুদুল আলম বলেন, উপক‚লীয় এ ইউনিয়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পানির বৃষ্টির পানি সংরক্ষন প্রকল্পের কাজ চলমান। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপাওে তিনি বলেন, পানির ট্যাংকি বিভিন্ন জন-প্রতিনিধির মাধ্যমে বন্টন হয়েছে। কে কত নিছে বলতে পারবো না। তবে আমি ১৭৫০ টাকা নিয়েছি।সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর- কালিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আতাউল হক দোলন বলেন, আমার নির্বাচনি এলাকা সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর- কালিগঞ্জ তে ২০ টি ইউনিয়নের ১৬ টিতে কাজ চলমান রয়েছে। বাকি চার ইউনিয়নের জন্য প্রস্তাব করেছি।অর্থ নেয়ার অভিযোগ তিনি স্বীকার করে বলেন, আমার কাছে অভিযোগ এসেছে, আগের এমপি থাকাবস্থায় টাকা নেয়া হয়েছে। তবে আমি নির্বাচিত হওয়ার পরে নতুন কোন কাজই শুরু হয়নি।খুলনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আকমল হোসেন বলেন, এই প্রকল্পে উপকারভোগী কারা হবেন, তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঠিক করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ৫০ শতাংশ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা বাকি ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেন। প্রকল্পের যা যা আছে, সেভাবে যেন কাজগুলো হয় সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। তার পরও যদি কোথাও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়, সেগুলো স্বচ্ছভাবে করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
#দুদকের তদন্ত চলমান # খুলনায় ফিরে আসার খবরে ক্ষিপ্ত নাগরিক সমাজখুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাসের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা রুজু হয়। আবারও তিনি খুলনায় আসার চেষ্টা করছেন। এমন সংবাদে ফুঁসে উঠেছেন খুলনাবাসি।খুলনায় চাকরি করা কালে কোটি কোটি টাকার সম্পদ তিনি গড়ে তোলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ কর্মকর্তা। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে ১০ কাঠা জায়গার উপর প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের একটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া বয়রাতে তার স্বামীর সাথে ৫ কাঠা জমি কিনেছেন যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকা। তার বাবার বাড়ী তেরখাদায় আলীশান বাড়ী ও মন্দির নির্মাণ করেছেন। যার মুল্য কয়েক কোটি টাকা। তার আরেক ভাই মুক্তি দাসকে দিয়ে তার সকল অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার খুলনার বাড়ীর পাশেই তার বোন লিপি দাসকে একটি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন। যার মুল্য কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা। বাবা,মা,ভাই, বোন ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামেও প্রচুর সম্পদ করেছেন। ভারতে তার ভাই দেবদাস এর নামে প্রচুর জমি ক্রয় ও বাড়ী নির্মাণ করেছেন।তাপসি দাস দুর্নীতির দায়ে ২০১২ সালে তিনি চাকুরী থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে রাজনৈতিক তদবীরে চাকুরী ফিরে পান। ২০১৮ সালে তার এই সম্পদের বিষয়ে নড়াইলের একজন ঠিকাদার দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করলে সেটি তদন্ত করে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪৬৬ টাকার অবৈধ সম্পদের সত্যতা পায় দুর্নীতি দমন কমিশন। এ ছাড়া ভারতেও তাপসী বিশ্বাসের বাড়ী ও মার্কেট আছে বলে শোনা যাচ্ছে।খুলনা,সাতক্ষীরা-চুকনগর সড়কে প্রথম কিলোমিটার মিনা বাজার হতে ময়লাপোতা পর্যন্ত কোন টেন্ডার বরাদ্দ ছাড়াই রাতের আঁধানে বিটোমিনাস অভারলে কাজ করা হয়। রানা বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নি¤œমানের রিজিট পেমেন্ট করায় রাস্তার কাজ শেষ না হতেই উপরের অংশ উঠে যায়। রড দিয়ে ঢালাই না করে শুধুমাত্র ঢালাই দেয়ায় রাস্তা অবস্থা এখনও নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এ কাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে তদন্ত টিম গঠন হয়। তাপসী দাস এখন ফরিদপুর জোনে তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। খুলনাায় আবারও ফিরে এলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে এমন অভিযোগ নাগরিক নেতাদের। তাপসী দাস খুলনায় কর্মরত থাকা কালে অনিয়ম ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ নিয়ে তদন্তে মাঠে নামে সড়ক বিভাগ। তার বিরুদ্ধে গঠন হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কমিটিতে ছিলেন সড়ক বিভাগ কুষ্টিয়া সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: মাসুদ করিম, সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিনসহ তিন কর্মকর্তা। এর পূর্বে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন। এছাড়া স্থানীয় ঠিকাদারগণ ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগও করেন। এছাড়া তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে মন্ত্রণালয় থেকে আরও একটি টিম গঠন হয়। তদন্ত টিমে আহবায়ক হিসেবে ছিলেন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের জয়েন্ট সেক্রেটারি মো: আনিসুল হক, উপ-সচিব মো: শামীমুজ্জামান ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হামিদুর রহমান।
#পাসের হার ৬শতাংশ#অধিকাংশ ফেল করেছে গনিতেউপজেলার নিশানবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসায় ফলাফলের চরম বিপর্যয় ঘটেছে। দাখিল পরীক্ষায় মাত্র ছয় শতাংশ পাস করেছে। সসচেয়ে বেশি ফলাফল খারাপ হয়েছে গনিত বিষয়ে। এ বিষয়ের শিক্ষক দু’বছর যাবত অনুপস্থিত। ফলাফল নিয়ে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা।চলতি বছরের দাখিল পরিক্ষা ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৮ জন ফেল, পাশ ২ জন। যার মধ্যে একজন রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষার্থি। শিক্ষার্থী ও অভিভবাবকদের দাবি মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলাম, গণিত শিক্ষক মৌসুমি পারভিন সহ কিছু কিছু শিক্ষক অনুপস্তিতের কারনে এরকম ফলাফল বিপর্যয়।২৮ জন ফেল করা শিক্ষার্থীর মধ্যে গণিত বিষয়ে ফেল করেছে ১৮ জন, এই গনিতের শিক্ষক মৌসুমি পারভিন। তিনি ২০২২ সালের শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। এবং মাসের পরে মাস অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। যা মাদ্রাসা সুপার ও তিনি ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন বলে একটি সুত্র জানিয়েছেন। তবে মাদ্রাসা সুপারের দাবি প্রথমে মাতৃত্বকালিন ও পরে বিএড করার জন্য ছুটিতে রয়েছে। এখানেও রয়েছে গড়মিল, মাদ্রাসার সুপার খুলনায় বিএড করার কথা জানালেও গণিত শিক্ষক ( মৌসুমি পারভিন )’র ম্বামী মুঠোফোনে পাবনায় বিএড করার কথা জানান। কারো কথায় কোন মিল নেই। তবে তিনি কোথাও বিএড করার জন্য ভর্তি হন নাই বলে একটি সুত্র জানায়।অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৮ মার্চে গণিত ম্যাডাম মৌসুমি পারভিন দুইটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন, তারও ৫ মাস আগে থেকে মাদ্রাসা সুপারের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন তিনি। নীতিমালা অনুযায়ী সর্বচ্চ ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়া গেলেও গণিত ম্যাডাম মৌসুমি পারভিন প্রতিষ্ঠানে আসেন না ২ বছর ৫ মাস ধরে। এছাড়াও অনুসন্ধানে জানা গেছে ২০২৩ সালের নীতিমালা অনুযায়ী একজন শিক্ষকের বছরে ১৫ দিন নৈমিত্তিক ছুটির বিধান থাকলেও মাদ্রাসার সুপার ৪০ দিনের বেশি নৈমিত্তিক ছুটি নেয়। যা হাজিরা খাতায় প্রমান পাওয়া যায়। গোপন সুত্রে জানা গেছে গণিত ম্যাডাম মৌসুমি পারভিন চাকরিচ্যুত হওয়ার জন্য বার বার রিজাইন পত্র দিতে চাইলেও গ্রহণ করছেন না মাদ্রাসার সুপার। কারন মাদ্রাসার সুপার গণিত ম্যাডামের বেতন-ভাতা থেকে প্রতি মাসে বড় একটা অংশ গ্রহণ করেন। এছাড়াও মাদ্রাসার সুপারের নামে অসংখ্য অনৈতিক কর্মকান্ডের সন্ধান পাওয়া যায়। যার মধ্যে দাখিল পরিক্ষা ২০১৮ তে পরিক্ষার হলে পকেট ভর্তি নকল নিয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান স্যারের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়া অন্যতর। যাতে জরিমানাও করা হয়েছিল মাদ্রাসার সুপারকে। এবং ২০১৮ সালে সেসিপ থেকে বরাদ্দকৃত পাঠাগার ও আলমারি ক্রয়ের টাকা আত্মসাৎ করে, পরবর্তীতে জানাজানি হলে নামমাত্র একটি ছোট আলমারি ক্রয় করে পাঠাগারের বই না কিনেই ধামাচাপা দেন বিষয়টি। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গভর্নিং বডির সভাপতি মোহাম্মদ তারেক সুলতানকে ফাঁকি দিয়ে মাদ্রাসার সুপার নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করলে তা তিনি জানতে পেলে হাতে নাতে ধরা পড়ে, ফলে সে বোর্ড বাতিল করে দেয়। এবং পরীক্ষা হলে নকলের সহায়তার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ার কারণে তাকে পরীক্ষার হল থেকেও সাসপেন্ড করেন।শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা জানান, শিক্ষকদের মাসের পর মাস অনুপস্থিতির কারণে মাদ্রাসায় নিয়মিত পাঠদান হচ্ছে না। এতে করে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে। জানা যায়, ১৯৮৪ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই পড়ালেখার মান ভালো হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা এ মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষকদের লাগামহীন অনুপস্থিত থাকার কারণে ভেঙে পড়েছে পাঠদানের নিয়ম শৃঙ্খলা। দিনে দিনে বিদ্যালয়টির শিক্ষার মান নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে স্থানীয়রা জানান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিকাংশ সহকারী শিক্ষক জানান, মাদ্রাসার সুপার ও গণিত ম্যাডাম চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে মাসের পর মাস স্কুলে উপস্থিত না হয়েও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। তাদের অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।গণিত ম্যাডাম মৌসুমি পারভিনকে মুঠোফোনে কল দিলে তার স্বামী ফোন রিসিভ করে বলেন, তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে হলে পাবনা গিয়ে বলতে হবে। তারা এখন পাবনায় অবস্থান করছেন।মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসায় এ বছর ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে। তবে কি কারণে হচ্ছে এটা বলা যাচ্ছে না।গনিত শিক্ষকের ব্যাপারে তিনি জানান, বিএড করার জন্য মাদ্রাসার গনিত শিক্ষক ছুটিতে রয়েছেন। খুলনা বিএড করছে বলে জানান তিনি।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে জমির উপরিভাগ কেটে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। যে যার ইচ্ছামতো খনন ও ভিটা তৈরীতে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে বিক্রি ও ব্যবহার করছেন। কৃষি অধিদপ্তর বলছে ফসলি জমির উপরিভাগের ছয় থেকে সাত ইঞ্চির মধ্যেই সব ধরনের জৈব গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়ার ফলে এসব জমির উৎপাদন ক্ষমতা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাবে। অপরদিকে ২০১৬ সালের কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইনের ৪ এর ১ ধারায় বলা হয়েছে বাংলাদেশের যে সকল কৃষি জমি রয়েছে, তা এই আইনের মাধ্যমে সুরক্ষা করতে হবে এবং কোনোভাবেই তার ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না। সম্প্রতি উপজেলার বেশ কয়টি চক্র প্রশাসনের কোন রকমের অনুমতি ছাড়াই ফসলি জমি থেকে এস্কোভেটর মেশিন দিয়ে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে ধান সবজি ও মাছ চাষের পুকুর, বসতভিটা তৈরি ও জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ট্রাক্টর দ্বারা বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে আসছে। এস্কোভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলনের ফলে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, যেভাবে জমি কেটে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে, এতে করে পার্শ্ববর্তী জমি ধসে ভবিষ্যতে গর্তে পরিণত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এসব মাটি উত্তোলনকৃত জমির প্বার্শবর্তী কৃষকরা। এই চিত্র উপজেলার প্রায় সবকটি এলাকায়। সরেজমিনে দেখাযায়, উপজেলা টিপনা এলাকায় বেলেখালী সংযোগ ব্যক্তি মালিকানাধীন ও খাস কৃষি জমি থেকে দিনদুপুরে ও রাতের আঁধারে এস্কোভেটর দিয়ে জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছেন। মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকার মিনারুল ইসলাম। সরেজমিনে যেয়ে মিনারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে কোন প্রকার অনুমতি আছে কিনা তিনি জানান, না বলে মাটি কাটছি, বাদ দেন ভাই। ৪ দিন আগে ডুমুরিয়া সহকারী কমিশনার ভূমি, সরেজমিনে এসে দেখে গিছে। আমি জমির মালিক মোঃ মুজিবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যে মাটি ক্রয় করে এস্কোভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলন করে ডাম্পার ট্রাকে রশিদ করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছি। সরেজমিনে গণমাধ্যম কর্মীদের সংবাদ প্রকাশ না করতে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ ও রেজাউল। মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী উপজেলা সদরের সাজিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা মিনারুল ইসলাম। এ ঘটনার বিষয়ে উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আরাফাত হোসেন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি না স্বীকার করে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাইনি। পরবর্তীতে জানান অবৈধভাবে এস্কোভেটর দ্বারা কৃষি জমির মাটি উত্তোলন ও অবৈধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আল-আমিন ইয়ুথ সোসাইটি নামে সোনাগাজীর ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আল আমিন সোসাইটির নতুন তারুণ্যভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। নবগঠিত এই প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে ফেনীর কৃতি সন্তান তরুণ সমাজসেবক ও সাংবাদিক কেফায়েত শাকিলকে। সদস্য সচিব হয়েছেন সোহাগ চৌধুরী।সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে আল আমিন সোসাইটি পরিচালিত আল আমিন আদর্শ নূরানী মাদ্রাসা মিলনায়তনে এক সাধারণ সভার মাধ্যমে এই সংগঠন ও কমিটি গঠন করা হয়।আল আমিন সোসাইটির সভাপতি কাজী মাওলানা এরশাদ উল্যাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই সভায় উপস্থিত থেকে নির্বাচন পরিচালনা করেন আল আমিন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা লকিয়ত উল্যাহ চৌধুরী, আল আমিন আদর্শ নূরানী মাদ্রাসার সুপার ক্বারী হাসান ও স্বপ্নছোঁয়া সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি তাসনিম উদ্দিন।আহ্বায়ক কমিটিতে নির্বাচিত অন্য যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, এমদাদ উল্লাহ, আব্দুল হালিম, আমজাদ উল্যাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ সাইমুন, দিদারুল ইসলাম।নবনির্বাচিত আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল জানান, আল আমিন সোসাইটি দীর্ঘ সময় ধরে সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমরা এলাকার তরুণদের অপসংস্কৃতি থেকে দূরে রেখে সমাজ সংস্কারে সম্পৃক্ত করতে নতুন করে তারুণ্যভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছি। এটি আল আমিন সোসাইটির ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন হিসেবে ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মহদিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত আল আমিন সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে পাঠাগার ও একটি নূরানি মাদ্রাসা পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে আল আমিন সোসাইটি। এসব কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ উপজেলার শ্রেষ্ট সমাজসেবী সংগঠনের স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছে সংস্থাটি।
ADDVERTISE HERE 336 x 280
ADDVERTISE HERE 728 x 90
ADDVERTISE HERE 728 x 90
© 2024 All rights reserved by the owner.