খুলনা থেকে শিক্ষক, ডাক্তার, এমপি, কাউন্সিলর সহ ৩ শতাধিক ব্যাক্তির নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হত্যা মামলা আবেদন করা হয়েছে। মামলার আবেদন করেছেন পাইকগাছায়
নিহত রকিবুল হসানের পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম গাজী।
মামলার আবেদনে বলা হয়, গত জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কারের উদ্দেশ্যে বৈষম্যবিরোধী যোক্তিক হার আন্দোলনে সারা দেশে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমার ছেলে রকিবুল হাসান ১৬ই জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি
চালানোর প্রতিবাদে ১৭ই জুলাই থেকে রাজপথে নেমে সক্রিয়ভাবে আন্দোলন শুরু করে। ক্রমান্বয়ে
আন্দোলন বেগবান হওয়ায় আমার ছেলে আন্দোলনের নেতৃত্বের সামনের সারিতে চলে আসে। শুরু থেকেই আন্দোলন দমাতে আওয়ামীলীগ সরকারের উচ্চ মহল থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে এবং সরকারী দল আওয়ামী যুবলীগ এবং ছাত্রলীগসহ তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীদেরকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। গত ০৫/০৮/২০১৪ ইং তারিখে আওয়ামী
সরকার পতনের পূর্বক্ষণে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী গ্রামে সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতা মিছিল করে। ছাত্র জনতার অধিকার আদায়ের সেই খোক্তক মিছিল দমন করার জন্য উল্লেখিত আসামীদের পরিকল্পনা এবং সরাসরি নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে উল্লেখিত আসামীসহ খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগের
কয়েকহাজার কর্মী সরাসরি গুলি বর্ষণ করে। আসামীদের ছোড়া গুলিতে অনেকেই আহত হয়।কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাহসী পদক্ষেপে আন্দোলন দমাতে ব্যার্থ হয়। এমতাবস্থায় আন্দোলনকারীদের বিদ্যুৎ দৃষ্টে মারার পরিকল্পনা করে উল্লেখিত আসামীরা। আন্দোলনকারীদের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে চাদখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার মাঝে পড়ে থাকা বাশ ও বিদ্যুতিক খুটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে নেওয়া হয়। এক পর্যায়ে কাচা বাশের মাথায় বাধা পতাকা হাতে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় আমার ছেলে রকিবুল হাসান এর হাতে থাকা বাশ বৈদ্যুতিক খুটির সাথে দেওয়া আসামীদের বিদ্যুৎ
এ দৃষ্ট হয় এবং ঘটনাস্থলেই আমার ছেলে রকিবুল হাসানের শরীর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় ও মৃত্যুর কোলে চলে পড়ে। আন্দোলনকারীরা আমার ছেলে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে উল্লেখিত আসামীগণ শেখ হাসিনার ভাই শেখ হেলান সহ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সরাসরি নির্দেশ ও তাবধায়নে কয়রা পাইকগাছা এলাকার ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাছাইকৃত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আন্দোলন দমাতে নগদ
অর্থের যোগান অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ এবং নিজেরা উপস্থিত থেকে গুলি বর্ষণ, দেশীয় অস্ত্র হকিস্টিক এবং রাম দা নিয়ে আমার ছেলে সহ আন্দোলকারীদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে
আন্দোলনকারীদের মেরে ফেলার জন্য নগ্ন পরিকল্পনা করে ও গণহত্যা চালায়। এতে করে আমার ছেলেসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী নিহত ও আহত হয়। এই আন্দোলনে চার শতাধিক লোক চোখ হারিয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছে এবং অঙ্গহানীর ঘটনা ঘটেছে সহস্রাধিক লোকের।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হত্যা মামলা আবেদনে অভিযুক্তরা হলেন, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল, কেসিসির সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ খুলনার সাবেক ছয় সংসদ সদস্য ও কেসিসির সাবেক কাউন্সিলরবৃন্দ।সাংবাদিকদের মধ্য এসএম নজরুল ইসলাম, এসএম হাবিব, মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, মোঃ শাহ আলম, সুনীল দাস
রকিব উদ্দীন পান্নু, মকবুল হোসেন মিন্টু, মল্লিক সুধাংশু, আসাদুজ্জামান খান রিয়াজ ও মোঃ জাহিদুল ইসলাম।
ADDVERTISE HERE 728 x 90 1