ভালো থাকুক প্রকৃতি ও তার সন্তানরা""'
মানুষ ও ধরিত্রীর বন্ধন বণ্যপ্রানী সংরক্ষণে ডিজিটাল উদ্ভাবন,
এই প্রতিপাদ্য কে ধারন করে আজ ৪ মার্চ সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় শান্তিধাম মোড়ে হাজী মেহের আলী রোড সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনা শাখার উদ্যোগে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও খুলনা শাখার সমন্বয়কারী পরিবেশবিদ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বাবুল হাওলাদার এর সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন শিক্ষক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, মানবাধিকার সংগঠক নাগরিক নেতা এস এম দেলোয়ার হোসেন, গনসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা শাখার আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম এফ এম মনিরুজ্জামান, খোদেজা ফাউন্ডেশনের খ ম শাহীন হোসেন, সুন্দরবন- নদী ও দক্ষিবঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল তারেক তুষার, অ্যাড: আরেফীন কবির, মোঃ হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
এসময়ে বক্তারা বলেন -বিশ্বের বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদকূল সংরক্ষণের প্রতি গণসচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ৩ মার্চ "বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস" পালন করা হয়। ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৬৮ তম সাধারণ অধিবেশনে বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ৩ মার্চ ঘোষণা করা হয়। ২০১৪ সালে প্রথম এ দিবসটি পালন করা হয। বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদগুলির প্রতি গণসচেতনা বৃদ্ধি করাই এ দিবসের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশে সরকার বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ৫৩টি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা করেছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষন ও অপরাধ দমনের জন্য বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এবং আইনে অধীন আনেকগুলি বিধিমালা ও নীতিমালা রয়েছে। বন্যপ্রাণী ও মানুষ সহাবস্থান তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে বন অধিদপ্তর। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে হলে প্রকৃতিতে বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি থাকতে হবে।
“World Wildlife Fund (WWF)”-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন যে হারে মানুষ প্রকৃতি আর পরিবেশ ধ্বংস করছে তা অতীতের সব রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছে। আর এই ধ্বংসের ঘটনা যে অদূর ভবিষ্যতে কমে যাবে, এমন কোনো ইঙ্গিতও নেই আপাতত। বন্যপ্রাণীর বর্তমান চিত্র সম্পর্কে WWF-এর রিপোর্ট জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী স্তন্যপায়ী, পাখি, উভচর, মাছ ও সরীসৃপের ২০ হাজার প্রজাতির ৬৮ শতাংশই হারিয়ে গেছে। সেই বিলুপ্তি সবচেয়ে বেশি হয়েছে ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও বাংলাদেশের ১৪ গবেষকের করা এক সমীক্ষায় বলা হয়-সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের বন ধারাবাহিকভাবে সংকুচিত হয়ে আসছে।
IUCN এর সমীক্ষা জানাচ্ছে, মানুষের বিভিন্ন কার্যক্রমে ২০০০ সাল থেকে বিশ্বে ১৯ লাখ মাইল ভূমি হারিয়ে গেছে, যা গোটা ব্রিটেনের ৮ গুণ। ১০ লাখ বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। প্রাণী ও উদ্ভিদের এক লাখ প্রজাতির মধ্যে ৩২ হাজার প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে পৌঁছে গেছে।
জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সনদ CBD তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ৪.৬১ শতাংশ স্থলভাগ এবং ৫.৪ শতাংশ সামুদ্রিক এলাকা সংরক্ষিত এলাকার আওতায় রয়েছে। CBD আওতায় করা কুনমিং-মন্ট্রিয়ল চুক্তি অনুযায়ী দেশের ১৭ শতাংশ ভূখণ্ড ও ১৩ শতাংশ সাগর এলাকাকে সংরক্ষিত হিসাবে ঘোষণা দিতে হবে। কারণ বেশির ভাগ সংরক্ষিত এলাকার আয়তন খুব ছোট হওয়ায় তা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারছে না।